1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

হাওরে বাঁধ ভাঙার তাণ্ডবে কাঁচা ধান কাটছেন কৃষক

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২২
  • ২৯৮ বার পঠিত

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের পাটলী ইউনিয়নের আসামপুর। শনিবার সন্ধ্যা থেকেই নলজুর নদীর পাড় উপচে পানি ঢুকছিল হাওরে। ফসল রক্ষায় পানি ঠেকাতে প্রাণপণ চেষ্টা করছিলেন কৃষকেরা। সন্ধ্যা থেকে রাত ১২ পর্যন্ত বাঁধ বাঁচাতে স্বেচ্ছাশ্রম দেন তাঁরা। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। হু হু করে পানি ঢুকে তলিয়ে যায় আধা পাকা ধান।

গতকাল রোববার সকালে গিয়ে দেখা যায়, তখনো পানি ঢুকছে হালির হাওরে। এর মধ্যেই আধা পাকা ধান কাটছেন স্থানীয় কৃষকদের কেউ কেউ। এ সময় হাওরে কথা হয় আসামপুর গ্রামের কৃষক মোহন মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘হাওরে পানি ঢুকে যাওয়ায় খেতের আধা পাকা ধান কেটে নিচ্ছি। যেভাবে পানি বাড়ছে, তাতে দিনের মধ্যেই পুরো হাওর পানিতে তলিয়ে যাবে।’

আরেক কৃষক মানিক মিয়া বলেন, ‘এ বছর ৬ কেদার জমিতে বোরো আবাদ করেছি। ধান না পাকায় কাটতে পারিনি। হাওরে পানি ঢুকে সব জমির ধান তলিয়ে গেছে। এখন সারা বছর দুঃখ-কষ্টে থাকতে হবে।’

হাওরের বেশির ভাগ এলাকায় বোরো ধান কাটা এখনো শেষ হয়নি। এর মধ্যেই বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে আবারও সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনায় হাওরের নদ-নদীতে পানি বাড়ছে। ফলে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে সেখানকার একমাত্র ফসল বোরো। আতঙ্কে দিন পার করছেন কৃষকেরা। বন্যার শঙ্কায় আগেভাগেই ফসল ঘরে তুলতে পাকা ধানের পাশাপাশি আধা পাকা ধানও কেটে নিচ্ছেন তাঁরা। এ জন্য হারভেস্টর মেশিন দিয়ে ধান কাটার পাশাপাশি অতিরিক্ত শ্রমিকও নিয়োগ দিয়েছেন কৃষকেরা।

নদ-নদীর পানি ফের বৃদ্ধি পাওয়ায় আতঙ্কে দিন পার করছেন নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলের কৃষকেরা। গত শনিবার সকাল থেকে ধনু নদের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এতে বাঁধ ভেঙে ফসলহানির শঙ্কা রয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর নেত্রকোনা জেলার ১০টি উপজেলায় ১ লাখ ৮৪ হাজার ৮৮৩ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১১ লাখ ৫৬ হাজার ৫৩ মেট্রিক টন। কিন্তু গত শনিবার বিকেল পর্যন্ত জেলায় বোরো ধান কাটা হয়েছে মাত্র ৫৪ শতাংশ।

নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোবারক আলী জানালেন, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকদের দ্রুত ধান কাটার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান জানান, আধুনিক পদ্ধতিতে ধান কাটা-মাড়াইয়ের প্রতি জোর দেওয়া হয়েছে। কৃষি বিভাগের ব্যবস্থাপনায় জেলায় নতুন ও পুরোনো মিলিয়ে প্রায় ১৪৫টি হারভেস্টর মেশিন দিয়ে ধান কাটা চলছে।

এদিকে গতকাল পর্যন্ত কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলের ৩০ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি বিভাগ। ভারতের চেরাপুঞ্জি ও দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে গত শুক্রবার থেকে দ্বিতীয়বারের মতো উজানের ঢলে কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলের নদীগুলোর পানি এখন বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই।

এর আগে ২ এপ্রিল রাত থেকে উজানের ঢলে প্রথম কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ৩ এপ্রিল সকাল থেকে ধনু ও বাউলাই নদীর অববাহিকার ৩৮০ হেক্টর বোরো ধানের খেত প্লাবিত হয়ে এসব জমির প্রায় সব ধান তলিয়ে যায়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য বলছে, যেকোনো সময় পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। হাওরের ধান পাকতে আরও ৭ থেকে ১০ দিন সময় লাগবে। উজানের ঢল অব্যাহত থাকলে যেকোনো সময় ফসল রক্ষা বাঁধ তলিয়ে পানি ঢুকে প্লাবিত হতে পারে পুরো হাওর।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ছাইফুল আলম জানান, হাওরের ধান কাটা ৩০ শতাংশ শেষ হয়েছে। ধান কাটার জন্য পর্যাপ্ত শ্রমিক রয়েছে। পাশাপাশি ২২২টি হারভেস্টর ও ২২টি রিপার রয়েছে হাওরে।

কিশোরগঞ্জের ১৪৭০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের হাওরাঞ্চলে চলতি বছর ১ লাখ ৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে।

দ্রুত বাড়ছে সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর পানিও, যা এখানকার হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধগুলোকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ভারতের চেরাপুঞ্জি ও সিলেটের সীমান্ত এলাকায় গত শনিবার রাতে বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় সুরমা নদীর সুনামগঞ্জ পয়েন্টে পানি আবারও বৃদ্ধি পেয়ে যেকোনো সময় তা বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে এবং ফসলহানি হতে পারে।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..